উইকিপিডিয়ার নিবন্ধের সাধারণ কাঠামো

উইকিপিডিয়াতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর নিবন্ধ রয়েছে। বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নিবন্ধগুলোর আকার, তথ্যের পরিমান ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি উইকিপিডিয়ার নিবন্ধই একটি সাধারণ গঠন পদ্ধতি থাকে। তবে সকল নিবন্ধই যে এই কাঠামোতে লেখা হয় এমন না। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক নিবন্ধগুলোর জন্য নিবন্ধগুলোর আলাদা আলাদা কাঠামো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন  কোনো ব্যক্তি সম্পর্কিত নিবন্ধ এবং ঐতিহাসির স্থানের নিবন্ধের কাঠামো একই ধরনের হবে না। উইকিপিডিয়ার সাধরণ অনুচ্ছেদগুলো হল।

ভূমিকা

উইকিপিডিয়ার প্রতিটি নিবন্ধের একই ভূমিকা অনুচ্ছেদ থাকতে হয়। নিবন্ধটি সম্পর্কে সাধারন ধারনা দেয়া এবং সামগ্রিক বিষযের উপর আলোকপাত করা হয় এই অনুচ্ছেদে। নিবন্ধে বিশেষ কোনো অংশে বেশি গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন হলে সেই বিষয়টি এই অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হতে পারে। তবে কখনোই কোনো বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাবে না এই অনুচ্ছেদে।

ইনফোবক্স

নিবন্ধে ভূমিকার মতই ইনফোবক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভূমিকাতে যে তথ্যগুলো বর্ণনার ভঙ্গিতে লেখা হয় তার অনেক তথ্যই সংযোজন করা হয় ইনফোবক্সে। তবে এখানে উল্লেখ করা হয় অত্যান্ত সংক্ষিপ্তভাবে। নিবন্ধের বিষয়ের সাথে সরাসরি যে তথ্যগুলোর জানার প্রয়োজন হতে পারে বা যে তথ্যগুলো উল্লেখ করা জরুরী সেগুলো সংযোজন করা হয় এই ইনফোবক্সে।

অন্যন্য অনুচ্ছেদ

নিবন্ধের প্রথম অনুচ্ছেদ হল “ভূমিকা”, “ইনফোবক্স” এই ভুমিকারই একটি অংশ। এর পরে নিবন্ধের বিষয় অনুযায়ী বিভিন্ন অনুচ্ছের সংযোজন করা হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র

প্রতিটি নিবন্ধে তথ্যসূত্র অনুচ্ছেদটি থাকতে হবে। উইকিপিডিয়ার মূলনীতি অনুযায়ী নিবন্ধের প্রতিটি তথ্যে এর সূত্র উল্লেখ করতে হবে। উইকিপিডিয়াতে তথ্যসূত্র সংযোজনের কিছু নির্দিষ্ট ফরম্যাট রয়েছে।

আরও দেখুন

নির্দিষ্ট নিবন্ধের সাথে সম্পর্কিত উইকিপিডিয়ার অন্যন্য নিবন্ধের লিংক, বিষয়ের সাথে প্রাসঙ্গিক টেমপ্লেট, অন্যন্য উইকিপ্রকল্প যেমন উইকিমিডিয়া কমন্স, উইকি সংকলন ইত্যাদি স্থানে নিবন্ধের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ লিংকগুলো যুক্ত করা হয়।

বহিঃসংযোগ

নিবন্ধের বিষয়ের সাথে প্রসঙ্গিক তথ্যের লিংক যুক্ত করা হয় এখানে। এই লিংকগুলো উইকিমিডিয়া বা এর অন্যান্য কোনো সহ প্রকল্পের লিংক নয়। অন্যান্য কোনো ওয়েবসাইট, বই বা অন্যন্য কোনো সূত্রের সংযোগগুলো উল্লেখ করা হয় এই অনুচ্ছেদে।

উইকিপিডিয়া কিভাবে ব্যবহার করবেন?

উইকিপিডিয়া একটি মুক্ত বিশ্বকোষ। এটি ইন্টারনেটের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এমন যেকেউ এই বিশ্বকোষটি ব্যবহার করতে পারবে। উইকিপিডিয়ার কোনো কাগজে ছাপানো সংস্করণ নেই। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এটি পড়া যাবে, প্রয়োজন্য ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট নিবন্ধগুলো সংরক্ষন করে রাখতে পারবেন। সংরক্ষন করে রাখার যাবে ওয়েব সাইট হিসাবে, পাশাপাশি পিডিএফ ফাইল হিসাবে ডাউনলোড করারও ব্যবস্থা রয়েছে উইকিপিডিয়াতে, আর পিডিএফ ফাইল তৈরী করা যাবে একটি নির্দিষ্ট নিবন্ধ থেকে আবার একাধিক নিবন্ধ একত্রিত করে পিডিএফ ফাইল তৈরীর অপশনও রয়েছে উইকিপিডিয়াতে।

উইকিপিডিয়া যেমন বিশ্বের সকলেই বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে, পাশাপাশি এই বিশ্বকোষ তৈরীতে অবদান রাখতে পারে যে কোনো ব্যবহারকারীই। এই বৈশিষ্টটি একই সাথে উইকিপিডিয়ার মূল শক্তি আবার এটি উইকিপিডিয়ার একটি দুর্বলতা। এটি একটি মুক্ত বিশ্বকোষ ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের অনেক মানসম্পন্ন লেখক এখানে অংশগ্রহনের সুযোগ পাচ্ছে। ফলে সামগ্রভাবে উইকিপিডিয়াতে ভালো নিবন্ধের সংখ্যা বাড়ছে। আবার যেহেতু যেকেউই এটি সম্পাদনা করতে পারে  ফলে এখানে তথ্য বিকৃতি বা ভুল তথ্য উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। যদিও এখানেও একইভাবে এই ভুল সংশোধনের সুযোগ উন্মুক্ত সকলের বিস্তারিত পড়ুন

উইকিপিডিয়া – কী ও কেনো?

উইকিপিডিয়া হলো ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি জ্ঞানকোষ, যা গড়ে উঠেছে পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে।

উইকি-প্রযুক্তিনির্ভর ওয়েবপেজকে পড়ার পাশাপাশি সম্পাদনাও করা যায়, আর তা করার জন্য ওয়েব ব্রাউজার ছাড়া আর কোনো সফটওয়ার লাগে না। ইন্টারনেট ভিত্তিক বলেইপৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসেই উইকিপিডিয়া পড়া বা এতে তথ্য যোগ করার কাজ করা যায়।

মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জিমি ওয়েল্‌স ২০০১ সালে উইকিপিডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে উইকিপিডিয়াতে কেবল ইংরেজি ভাষাই ব্যবহৃত হতো। কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীর ২৮৩টিরও অধিক ভাষায় উইকিপিডিয়ার সংস্করণ রয়েছে।

তার ইচ্ছা ছিল একটি বড়সড় অনলাইন বিশ্বকোষ তৈরি করা। তবে অন্যান্য বিশ্বকোষ ধারণার চেয়ে এটি আলাদা ছিল অন্য কারণে। এটি কোনো বেতনভোগী বিশেষজ্ঞ, সম্পাদক বা লেখক দিয়ে এই বিশ্বকোষ লেখানো হবে না, বরং এই বিশ্বকোষের লেখক হবেন তারা, যারা তা হতে চান! উইকি নামের একটি সফটওয়্যার; যা দিয়ে ওয়েবসাইটে সম্পাদনা, মোছা কিংবা পরিবর্ধন করা যায় সেটি ব্যবহার করে ওয়েলেস আর তার স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা গড়ে তুলেছেন এক বিশাল জ্ঞানভান্ডার যার সঙ্গে তুলনা চলে কেবল আলেকজান্দ্রিয়ার লাইব্রেরির।

শুরুতে অর্থাৎ ২০০১ সালে অনেকে একে পাগলামি বলেছেন। আর এখন এটি এই গ্রহের সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ। উইকিপিডিয়ার ইংরেজি সংস্করণে রয়েছে ৩৮ লাখেরও বেশি বিষয়। অপরদিকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও অভিজাত বিশ্বকোষ এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকায় রয়েছে ৫ লাখ আর মাইক্রোসফটের এনকার্টায় রয়েছে মাত্র বিস্তারিত পড়ুন